সব খবর সবার আগে
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সারাদেশ

কুষ্টিয়ায় না ফেরার দেশে সাংবাদিক জাহিদুল আলম জয়ের নানা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম এর বাবা মোঃ আব্দুল করিম শেখ আর নেই। বার্ধক্যজনিত কারণে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) নিজ বাড়ি কুষ্টিয়ায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। জানাজার নামাজ শেষে দুর্বাচারা ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন গোরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

0 372

করিম শেখের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন কুষ্টিয়া ৪ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর, উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন মোল্লা, উজানগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবু-বিন-ইসলাম সাবুসহ আরও অনেকে। করিম শেখ জনপ্রিয় দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জাহিদুল আলম জয়ের নানা।

শেখ আব্দুল করিম একজন দেশপ্রেমিক ও দানবীর মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত দুর্বাচারা গ্রামে। তিনি ছয় ছেলে ও পাঁচ মেয়ের জনক। এরমধ্যে মেজো ছেলেকে হারিয়েছেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। দুর্বাচারা গ্রামের মল্লিকপাড়ায় তিনি পুরো জীবন কাটিয়েছেন। দীর্ঘ জীবদ্দশায় করিম শেখ অনেক গরিব-দুখিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিজ বাড়ির প্রাঙ্গনে জমি দান করে মসজিদ করেছেন। পাশাপাশি ফসলি জমিও মসজিদের নামে দান করেছেন। করিম শেখের মেজো ছেলে তাজুল ইসলাম ১৯৭১ সালের মুুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। ৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার বংশীতলা যুদ্ধ জেলার অন্যতম বড় যুদ্ধ। ওই যুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করেন তাজু। আর তিনি যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন বাবা করিম শেখের আদেশে। ওই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে গোটা দেশের মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন।

বঙ্গবন্ধুর ডাক নাড়া দিয়েছিল করিম শেখকেও। তিনি তার সদ্য বিবাহিত তরুণ ছেলে তাজুলকে যুদ্ধে অংশ নেয়ার আদেশ করেন। যার ফলশ্রুতিতে তাজুল ভারতে টেনিং করতে যান। সেখান থেকে ফিরে বংশীতলা যুদ্ধে অংশ নেন। অত্র এলাকার সবার মুখে মুখে এখনো তাজুর বীরত্বগাথা শোনা যায়। একাই লড়াই করে পাক হানাদারদের শায়েস্তা করেছিলেন তাজু। পরে দেশীয় দোসর রাজাকারদের সহায়তায় কাপুরুষের মতো পেছন থেকে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। ছেলে হারানোর সেই শোক বুকে নিয়ে এতদিন বেঁচে ছিলেন করিম শেখ। তৎকালীন সময়ে অনার্স পড়ুয়া তাজুল সদ্য বিবাহিত স্ত্রীর হাতের হলুদ থাকা অবস্থাতেই ভারতে ট্রেনিংয়ে যান। সেখান থেকে এসে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মৃত্যুর আগে এক সাক্ষাকারে শহীদ তাজুলের বাবা করিম শেখ বলেছিলেন, ‘তাজুল ছিল পরোপকারী। অন্যের উপকার করাই ওর নেশা ছিল। দুঃসাহসী তাজু বংশীতলা যুদ্ধে একাই শায়েস্তা করেন এক পাক সেনাকে। ওর শক্তির কাছে হার মেনে শত্রুরা পেছন থেকে গুলি করে কাপুরুষের মতো ওকে হত্যা করে। দেশের জন্য ছেলে (চোখ মুছতে মুছতে) জীবন দিয়েছে এটা ভাবলে গর্ব লাগে।’

সর্বশেষ খবর এবং আপডেটের জন্য আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন। আপনি যেকোনো সময় বন্ধ করতে পারবেন।

Loading...

আমরা কুকি ব্যবহার করি যাতে অনলাইনে আপনার বিচরণ স্বচ্ছন্দ হয়। সবগুলো কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মতি দিচ্ছেন কিনা জানান। হ্যাঁ, আমি সম্মতি দিচ্ছি। বিস্তারিত